দরসুল কোরআন মাহফিল
দরসুল কুরআন মানে আল-কোরআনের পঠন-পাঠন, আলোচনা, ব্যাখ্যা করণ ও শিক্ষাদান। কালের আবর্তনে জ্ঞানের দৈন্যতার কারণে তাফসীরুল কুরআনে পারদর্শী ব্যক্তির অভাবে পরবর্তী আলেম সমাজ তাফসীর-এর পরিবর্তে "দরস" শব্দটি ব্যবহার করে আসছেন। আবার মাহফিলের মাধ্যমে আম জনতার কাছে আল-কোরআনের আলোকে আক্বিদা ও আমলের পেশ করা হয়। কারণ এর নাম হয়েছে দরসুল কোরআন।
সাধারণ মানুষের সামনে তাফসীর বা কুরআনের তাত্ত্বিক বিশ্লেষণ যেমন আবার আল কোরআনের বাণীকে কোন শ্রেণী বা গোষ্ঠীর মধ্যে সীমাবদ্ধ করে রাখাও সংকীর্ণতার নামান্তর। কেননা আল-কোরআনের আবেদন সার্বজনীন।
সমগ্র মানব জাতির হেদায়তের জন্য এর অবতারণ। এই দিক বিবেচনায় অন্য কোন নামের চেয়ে দরসুল কোরআন নামটি যথাযথ ও স্বার্থক বলা যায়।
দরসুল কোরআন মাহফিল কেন?
অবতীর্ণের পর থেকে আল-কোরআনের পঠন-পাঠন ও শিক্ষাদানের বিভিন্ন পদ্ধতি চালু ছিল। প্রথম যুগে শুধু মৌখিকাবে, পরবর্তীতে মৌখিক ও লিখিত আকারে এবং তৎপরবর্তীতে ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ ও গবেষণা আকারে এর চর্চা হয়েছে। তবে সর্বযুগে মাহফিল পদ্ধতি চালু ছিল। বর্তমানে ইন্টারনেটের যুগেও মাহফিল পদ্ধতির আবেদন একটুও কমেনি। তবে আবেদন কমেছে সনাতনী পদ্ধতির আলোচনা, অবৈজ্ঞানিক যুক্তি, মনগড়া ব্যাখ্যা,তত্ত্বহীন উপস্থাপনার। কদর কমেছে অপরিমার্জিত ও অশুদ্ধ ভাষা ব্যবহারের। সুশৃঙ্খলাপূর্ণ মাহফিলে মার্জিত ভাষা বিষয় ভিত্তিক গঠনমূলক সার্বজনীন আলোচনা শুনতে এই যুগেও দরসুল কোরআন মাহফিলে জনগণের সুশৃঙ্খল উপস্থিতি ও সহযোগিতা প্রমাণ করে যে, জনতার সামনে কুরআন সুন্নাহর সঠিক তত্ত্ব যথাযথভাবে পেশ করা গেলে তাদের সার্বিক জীবনে পরিবর্তন আসবে নি:সন্দেহে। এই দৃষ্টিকোন থেকে দরসুল কোরআন মাহফিলকে মডেল হিসেবে গ্রহণ করা যায়।
আঞ্জুমানে খুদ্দামুল মুসলেমিন বাংলাদেশ
আজ থেকে প্রায় সাড়ে চৌদ্দশ বছর পূর্বে মানুষের মধ্যে মানবিক সম্পর্ক বলে কিছুই ছিলনা। তৎকালীন উশৃঙ্খল সমাজে প্রতিযোগীতা দিয়ে মানুষ মানুষকে হত্যা করেছে।
মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা: সেই সমাজে মানবতার বাণী নিয়ে হাজির হয়েছিলেন। ঘোষণা করেছিলেন মানুষ মানুষের ভাই। মানবতার সেবাই মানুষের পরম ধর্ম। মানব সেবার সেই মহান ব্রত নিয়ে ১৯৮৮ সালে গঠিত হয়েছিল " আঞ্জুমানে খুদ্দামুল মুসলেমিন বাংলাদেশ" প্রতিষ্ঠা লগ্ন থেকে এ সংগঠনের মাধ্যমে গরীব ও মেধাবী শিক্ষার্থীদের আর্থিক অনুদান প্রদান, গরীব মেয়েদের বিবাহ দেয়া, প্রাকৃতিক দূর্যোগে আক্রান্তদের সহায়তাসহ নানা জনহিতকর কর্মকান্ড চালিয়ে আসছে।
এছাড়াও কুরআনের সঠিক তথ্য ও তত্ত্ব জাতির কাছে তুলে ধরতে সংগঠনটি দেশের প্রতিটি বিভাগে পবিত্র দরসুল কোরআন মাহফিল আয়োজন করে আসছে।
আঞ্জুমানে খুদ্দামুল মুসলেমিন বাংলাদেশ এর ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা সমূহ:
১.যাবতীয় চিকিৎসা সেবা সম্বলিত আধুনিক হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা ।
২.আন্তর্জাতিক মান- সম্পন্ন স্কুল, কলেজ প্রতিষ্ঠা ।
৩.নও মুসলিম পূনর্বাসন কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা ।
৪.বিধবা ও বয়স্কদের জন্য পূনর্বাসন কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা ।
৫.সুন্নীয়ত প্রচারে ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়াসহ একটি বহুমুখী প্রকাশনা কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা ।
৬.সুন্নীয়তের প্রচার- প্রসারে একটি ইসলামী গবেষণা কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা ।
৭.দেশের প্রতিটি জেলায় পাঠাগার প্রতিষ্ঠা ।
৮.কর্মমুখী কারিগরি শিক্ষা কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা ।
৯.বিজ্ঞান ভিত্তিক আধুনিক মাদরাসা ও ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা ।
১০.মসজিদ, মক্তব ও এতিমখানা প্রতিষ্ঠা ।
১১.দেশের প্রতিটি জেলায় দরসুল কোরআন মাহফিল আয়োজন ।